চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দর্শনা থানার বেগমপুর ইউনিয়নের খোরশেদপুর গ্রামের কৃষকেরা সূর্যমুখী চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দর্শনা থানার খোরশেদপুর গ্রামের কৃষি খামার কেরু এন্ড কোম্পানির কৃষক ফুরশেদ (৩৫) তাদের জমিতে সূর্যমুখী আবাদ করে লাভবান হয়েছেন। তাদের সাফল্য দেখে এলাকার অন্যান্যও কৃষকরাও সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছেন। সূর্যমূখী ফুলের চাষ নিয়ে আশাবাদী কৃষি কর্মকর্তারাও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চার থেকে ছয় ফুট লম্বা সুর্যমুখী গাছে ফুল ফুটে আছে। ফুলের সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে। সুর্যমুখী ফুল দেখতে প্রতিদিনই আসছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ।ফুরশেদপুর কৃষি খামার কেরু কোম্পানির কৃষক দৈনিক নতুন দিন প্রতিনিধিকে বলেন,২ বিঘা জমিতে গত বছর অন্যান্য চাষ করে লোকসান গুণতে হয়েছে। তাই তিনি এ বছর কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। সূর্যমুখী চাষে খুব বেশি পরিশ্রম হয় না। শুধু বীজ বপণে একটু শ্রম দিতে হয়। এরপর দেখভাল করলেই চলে।দুই বিঘা জমিতে এখন পর্যন্ত তার ৪ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। সূর্যমুখী চাষে লাভবান হবেন বলে আশা এ কৃষকের।
চুয়াডাঙ্গার ভান্ডারদহ গ্রামের কৃষক মানার গাড়ী ড্রাইভারের পাশাপাশি তিনি নিজের জমিতে কৃষিকাজও করেন। তার বাড়ির কাছে এক একর জমিতে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করেন। কিন্তু ওইসব ফসল থেকে তিনি লাভের মুখ দেখেন নি। পরে কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি ওই জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু করেন। কৃষি অফিস থেকেই তাকে বীজ দেওয়া হয়েছিল। চাষাবাদে তার সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে মাত্র ১২ হাজার টাকা। সূর্যমূখীর ফলন খুবই ভালো হয়েছে। তিনি গাড়ী ড্রাইভারের পাশাপাশি অন্যদেরকে দেখে তিনিও কৃষিকাজে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।তার তার স্ত্রী কৃষি কাজে উৎসাহিত যতটা পারেন সহযোগিতা করেন।
সূর্যমুখী ফুল দেখে তার খুবই ভাল লাগছে। মনে এক ধরনের প্রশান্তিও অনুভব করছেন। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই মানুষ আসছে। সূর্যমূখী ফলন হয়েছে তাতে তিনি খুশি।তিনি বলেন, “সূর্যমূখীর তেল রান্না করে খাওয়ার পাশাপাশি গাছগুলো জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এখন থেকে প্রতি বছর সূর্যমূখী ফুলের চাষ করব।” চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, “বাংলাদেশে ভোজ্য তেল হিসেবে হিসেবে সাধারণত সয়াবিন ব্যবহার হয়ে থাকে।
সয়াবিনের নির্ভরতা কমাতে সূর্যমুখী চাষের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সূর্যমুখী চাষ করে কৃষকরা উন্নতমানের তেল পাবে।তিনি বলেন, “চলতি বছর এ উপজেলায় ১৫ একর জমিতে ষাট জন কৃষক সূর্যমুখী ফুলের চাষ করছে। অনেক কৃষককেই বিনামূল্যে সূর্যমুখী ফুলের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। প্রতি বছরই সূর্যমুখীর চাষ বাড়ছে।”