সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ৩৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার জরিমানা করেছে নিউউয়র্কের একটি আদালত। নিজের সম্পদের মূল্য বাড়িয়ে দেখানোর মাধ্যমে ঋণদাতাদের সঙ্গে প্রতারণা করার দায়ে তাকে এ জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া তিন বছরের জন্য কোম্পানির পরিচালক হিসাবে কাজ করা বা রাজ্যের ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়াকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। খবর বিবিসি।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিচারক আর্থার এনগোরন এ রায় দেন। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন দৌঁড়ে এগিয়ে থাকা প্রার্থী ট্রাম্প আরেকটি মামলায় আইনি বিপর্যয়ের মুখোমুখি হলেন। এই রায়ে তার বিশাল আবাসন ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুক্রবারের রায়ে, বিচারক এনগোরন বলেন , আসামিপক্ষকে জরিমানা না করলে তারা এ ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারে। এ সময় তিনি আরো বলেন, ট্রাম্প অর্গানাইজেশন ২০২২ সালের একটি ফৌজদারি ট্যাক্স জালিয়াতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল, যা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তার শীর্ষ কর্মকর্তাদের অফ-দ্য-বুক সুবিধা দিয়ে আসেছে।
৯২ পৃষ্ঠার এই রায়ে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের জালিয়াতির কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে। তাদেরকে অনুতাপ ও বিবেকহীন বলে আদালত জানায়, তাদের ব্যবসায়িক লাইসেন্স যে বাতিল করা হয়নি এটাই তাদের সৌভাগ্য। রায়ে ট্রাম্পের দুই ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র ও এরিক ট্রাম্পকে ৪০ লাখ ডলার করে জরিমানা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের কোম্পানির সাবেক সিওও অ্যালান ওয়াইসেলবার্গকে জরিমানা করা হয় ১০ লাখ ডলার।
এ ছাড়া রায়ে আরো বলা হয়, ট্রাম্প তিন বছর নিউ ইয়র্কে কোনো ব্যবসা করতে পারবেন না, আর তার দুই ছেলে দুই বছরের জন্য এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবেন। ট্রাম্প, তার কোম্পানি বা এই কোম্পানির অধিভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠান তিন বছরের জন্য কোনো ঋণের আবেদন করতে পারবেন না। ট্রাম্পের দুই ছেলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই রায়ের নিন্দা করেছেন।ডোনাল্ড জুনিয়র দাবি করেছেন যে রায়টি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এরিক বিচারককে “একজন নিষ্ঠুর ব্যক্তি” বলে অভিহিত করেছেন।
নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশা জেমস এ মামলাটি দায়ের করেছিলেন। অভিযোগ ছিল, ট্রাম্প ও তার পরিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ট্রাম্প অর্গানাইজেশন ঋণের শর্তে সুবিধা পাওয়ার জন্য এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ব্যাংকারদের ধোঁকা দিয়ে বছরে তার মোট সম্পদের মূল্য প্রায় ৩৭০ কোটি ডলার বেশি দেখিয়েছেন।
শুক্রবার বক্তৃতাকালে, তিনি বলেছিলেন: ‘আইন সবার জন্য সমান। প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের জন্য আইন ব্যতিক্রম হতে পারে না।’