বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত না থাকলে খুনিদের বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে সহযোগিতা এবং বিভিন্ন দূতাবাসে পুনর্বাসন কেন করেছিল- সেই প্রশ্ন রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান নিজের উদ্যোগী হয়ে খুনিদের বিদেশি দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে। তাদের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। সে খুনি না হলে তাকে কেন সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো। খুনিদের বিভিন্ন জায়গায় পুনর্বাসিত করেছে। তিনি বলেন, যেদিন বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের রায় হবে সেদিনও হরতাল ডেকেছিল বিএনপি, যাতে বিচারক আদালতে যেতে না পারেন। কিন্তু সেদিন রায় হয়েছিল।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে ১৫ আগস্টে নির্মম হত্যাকাণ্ডের সেই দিনের স্মৃতি স্মরণ করেন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে অনেক জায়গায় মানবাধিকারের কথা বলা হয়, সরকারের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। ১৫ আগস্ট আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি, সেসময়ে মানবাধিকার কোথায় ছিল? আমি মা-বাবা হারিয়েছি, আমি বিচার চাইতে পারবো না, মামলা করতে পারবো না। আমরা মানুষ না?’
‘যারা আজকে সাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দেয়, সেই দেশই তো খুনিদের আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। তাদের কাছ থেকে আমাদের মানবাধিকারের ছবক শেখায়। যারা বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের নারী-শিশুদের হত্যা করেছে। আমার প্রশ্ন, আমাদের মানবাধিকার কোথায়? যারা খুনিদের লালন-পালন করলো, যারা খুনি-মানবাধিকার লঙ্ঘন করলো; তাদের মানবাধিকার নিয়ে তারা ব্যস্ত। বিএনপি এদের লালন-পালনকারী।’
পরিবারের সবাইকে হারিয়ে বেঁচে থাকা যে কত কষ্টের তা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসলে কখনও এই হত্যার বিচার হতো না।
তিনি বলেন, সারাবিশ্বে এই হত্যার বিচারের জন্য জনমত চালিয়েছি। আমাদের নিয়ে মিথ্যাচার-অপপ্রচার করা হয়েছে। তারপরও দেখা গেল, বাংলার মানুষের মন থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা যায়নি। …চুয়াত্তরে চক্রান্ত করে দুর্ভিক্ষ ঘটানো হয়েছিল। যখন কিছুতেই পারছিল না, তখন তাকে হত্যা করা হলো।
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে কষ্ট-বেদনা সহ্য করে দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা এই দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। সব সহ্য করে নীলকণ্ঠ হয়ে অপেক্ষা করেছি, কবে ক্ষমতায় যেতে পারবো। এই দেশকে সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারবো। মানুষের মুখে হাসি ফোটাবো।’
এসময় তিনি জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।