চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় বিনা ধান-১৯ ও ২১ চাষে বাম্পার ফলন ও বাজারে ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া এ ধান চাষের উপযোগী হওয়ায় কৃষকেরা ভাল ফলন পেয়েছেন।
এ ধান চাষে কম খরচ আর স্বল্প সময়ের মধ্যে ফলন পাওয়ায় আগামীতে এ জাতের ধান ব্যাপক ভাবে চাষের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সুত্র জানায়, উপজেলায় বিনা ধান -১৯ চাষ বেশ কয়েক বছর ধরে চাষ হলেও বিনা ধান -২১ প্রথম বারের মত পরিক্ষা মুলক চাষ করা হয়েছে। এ বছর উপজেলায় ২০ হেক্টর জমিতে বিনা ধান -২১ চাষ হয়েছে। এ ধান চাষে প্রত্যাশার চেয়ে বেশী ফলন পাওয়া গেছে।
আশা করা হচ্ছে আগামী আউশ মওসুমে উপজেলায় বিনা ধান-২১ চাষ বাড়বে। কম সময়ে কম খরচে প্রায় দ্বিগুন ফলন হওয়ায় বিনা ধান-২১ চাষে দিন দিন চাষিদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। জীবননগর উপজেলার মাধবখালী গ্রামের প্রশিক্ষিত কৃষক রাজেদুল ইসলাম বলেন, এ বছর আউশ মওসুমে প্রথম বারের মত দুই একর জমিতে পরিক্ষামুলক বিনা ধান -২১ আবাদ করেছিলাম। ফলন কেমন হবে তা নিয়ে বেশ চিন্তার মধ্যে ছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত ফলন বাম্পার হওয়ায় সে চিন্তা কেটে গেছে।
আগামীতে আর বেশী জমিতে বিনা ধানের আবাদের আশা করছি।ধানের বাম্পার ফলন আর বাজারে দাম ভাল পাওয়ায়,আমার দেখাদেখি এলাকার চাষিরা তাদের জমিতে বিনা ধান -২১ চাষ করবেন বলে আমার কাছে পরামর্শ নিচ্ছেন।রাজেদুল ইসলাম আরো জানান,এ ধান বীজ বপনের ২০ দিনের মধ্যে চারা রোপন করা যায় এবং ৩০ দিনের উৎপাদন সম্ভব। প্রতি বিঘা জমিতে ২০-২২ মণ ফলন হয়েছে। বাজারে এ ধানের চাহিদাও ভাল।উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের বিনা ধান চাষি রেজাউল হক, জাহাঙ্গীর আলম বলেন,বিনা ধান-২১ চাষে ফলন বেশী। ধান চিকন হওয়ায় বাজারে চাহিদা ও দামও ভাল।
বিনা ধানের ভাতও খেতে সুস্বাদু। এ ধানের ২৯-২৫ দিনের চারা লাগালে ৭০-৮০ দিনের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তোলা যায়।বিনা উপকেন্দ্র মাগুরা পরামণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত ও সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শেফাউর রহমান বলেন,আফ্রিকার নেরিকা-১০ ধানের জাত থেকে বিনা ধান-২১ জাতের উদ্ভব। নেরিকার ফলন কম হতো,যে কারনে কৃষকের এ জাতের প্রতি আগ্রহও কম ছিল। গবেষণায় গামা রশ্মি প্রয়োগের ফলে ফলন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।
এতে গাছের কম-বেশি উচ্চতায় সমান করা হয়েছে। মোটা ধানকে চিকন করা হয়েছে। ফলে এ ধান চাষে দিন দিন কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। আগামী আউশ মওসুমে এই ধানের আবাদ বাড়বে এবং খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।