চুয়াডাঙ্গার জীবননগর বাজারের চ্যাংখালী সড়কের পাশে জেলা পরিষদের জমিতে গড়ে ওঠা দোকান ভাড়ায় নিয়ে ব্যবসা করে আসা দোকানিকে কমান্ডো স্টাইল দোকান থেকে বের করে দিয়ে তালা মেরে দিয়েছেন মালিক রকিবুল মিয়া।
অভিযোগ উঠেছে আদালতের আদেশ অমান্য করে লক্ষ লক্ষ টাকার মালামালসহ দোকান ঘরটি দখল করে নেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় ঘরের মালিক দাবিদার রকিবুল মিয়া দুই ট্রাক্টর ইট নিয়ে দোকানের সামনে স্তুপ করে দোকানের ব্যারিকেড সৃষ্টি করে দেয়।
ঘটনাটি শনিবার সকালের দিকে সংঘটিত হয়েছে। দোকানি শান্তিপুর্ণ সমাধানের জন্য ধর্ণা দিচ্ছে সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে। এ ঘটনায় দোকানি আলাউদ্দিন তোতা মিয়া পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
জীবননগর বাজারের প্রত্যক্ষদর্শীরা ব্যবসায়ীরা জানান,শনিবার সকাল দশটার দিকে জীবননগর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী রকিবুল মিয়া তার লোকজন নিয়ে বাজারের তুলি ক্রোকারিজ গার্ডেন নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে থাকা কর্মচারীদের বের দিয়ে তালা মেরে দেয়। এ অবস্থায় দোকানি তোতা মিয়ার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। দোকানের ভিতরে আটকা পড়ে লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল। সাথে সাথে দোকানের সামনে দুই গাড়ী ইট এনে দোকান ব্যারিকেড দিয়ে দেয়।জীবননগর পৌর শহরের রাজনগরের আলাউদ্দিন তোতা মিয়া বলেন, জেলা পরিষদের জমিতে গড়ে ওঠা দোকান রকিবুল মিয়ার নিকট থেকে ভাড়া নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যবসা করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। তাকে প্রতি মাসে দেকান ভাড়া বাবদ ১২ হাজার করে ভাড়া দিয়ে আসছি।
সম্প্রতি তিনি আমাকে কোন কারণ ছাড়াই দোকান ভাড়া দিবে না বলে জানান। আমি তাকে বলি আমাকে সময় দিতে হবে। তিনি বলেন কোন সময় হবে না। তারপর আমি ব্যবসা চালিয়ে যেতে থাকি। এ অবস্থায় রকিবুল মিয়া রাজনৈতিক লিডার,ক্যাডার আর কথিত ঘর মালিক সমিতির নেতাদের নিয়ে আমাকে দোকান থেকে বের দেয়ার হুমকি ধামকী দেয়। আমি বাধ্য হযেই আদালতে একটি মামলা করি।
আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও আদালতের আদেশ অমান্য করে তিনি শনিবার সকাল ১০ টার দিকে দল বল নিয়ে আমার দেকানের কর্মচারীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদেরকে দোকান থেকে বের করে দিয়ে লাখ লাখ টাকার মালামালসহ দোকানে তালা মেরে দেয়। সাথে সাথে দুই গাড়ী ইট এনে দোকানের সামনে স্তুপ করে দেয়, যাতে আমি দেকানে কোন ভাবে যেতে না পারি। এখন আমি ব্যবসা করতে না পেরে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।হাজী রকিবুল মিয়া বলেন, আমি তোতাকে কখনও ঘর ভাড়া দেয়নি। আমি ঘর ভাড়া দিয়েছিলাম টুটুলকে। এর বাইরে আর কিছু মোবাইল ফোনে বলা সম্ভব নয়।জীবননগর বাজারের দেকান মালিক সমিতির মুন্সী নাসির উদ্দিন বলেন, তোতাকে আমরা অনেক দিন ধরে দোকান ছেড়ে দেয়ার কথা বলার পরও দেকান ছাড়ছে না।
আমরা তাকে ডাকলেও আসে না। আমরা,পৌরসভার মেয়রসহ সকলে থেকে দোকানে তালা মারা হয়েছে। তবে তোতাকে আর মার্সি করা হবে না। তাকে সুযোগ দিলে জেলা পরিষদের জায়গায় দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে যারা ব্যবসা করছে তারা সবাই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ পাবে।জীবননগর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, উভয় পক্ষকে ডেকে বসে কি সমাধান করা যায়,সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সচিব মিজানুর রহমান বলেন,জেলা পরিষদের জমি লিজ/ডিসিার কেটে সেখানে পাকা স্থাপনা করে তা ভাড়ায় দেয়া অবৈধ। এমন ঘটনা জীবননগরে সবচেয়ে বেশী। বিষয়টি নিয়ে আমরাও ভাবছি।জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক বলেন, ঘটনার ব্যাপারে উভয় পক্ষ আদালতে মামলা করেছে।আদালতের আদেশ মোতাবেক আমরা উভয় পক্ষকে নোটিশ দিয়েছি। ঘটনার কথা শুনেছি।
উভয় পক্ষই শান্তিপুর্ণ বিরোধটি নিষ্পত্তি করে নিবে বলে জানিয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।
620
Shares
শেয়ার করুন
শেয়ার করুন