ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়ক অব্যাহতভাবে গড়তে হবে- ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন,  মহাসড়ক না হলে যেমন যানবাহন চলতে পারে না, তেমনি ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়ক ছাড়া ডিজিটাল প্রযুক্তি চলতে পারেনা। তিনি বলেন আমাদেরকে ডিজিটাল সংযুক্তির মহসড়ক অব্যাহতভাবে গড়তে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চাদপদ বাংলাদেশে অনন্য ডিজিটাল সড়ক গড়ে তুলেছেন। মন্ত্রী হাওর অঞ্চলের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, যেখানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে একসময় বলা হতো ‘বর্ষায় নায়ে, হেমন্তে পায়ে’- সেই হাওর এলাকার মা ডিজিটাল সংযুক্তির কল্যাণে এখন হাওর এলাকার গোয়াল ঘর বন্যায় ডুবে যাওয়ার চিত্র তার ছেলেকে মোবাইলের মাধ্যমে দেখাতে পারছে। তিনি আরও বলেন যে এই মহাসড়ক নির্মাণে বিটিআরসি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করছে যা আগামীতে আরও জোরদার করতে হবে।

তিনি বিটিআরসির বিভিন্ন উদ্যোগের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে ধন্যবাদ প্রদান করেন। এসব উদ্যোগের মাঝে রয়েছে বিশ্বের সর্বনিম্ন ইন্টারনেট হার এক দেশ এক রেট প্রবর্তন, বাংলা এসএমএস এর অর্ধেক মূল্য নির্ধারণ, ৪জি-৫জির স্পেকট্রাম নিলাম, টেলিকম খাত থেকে বিপুল জাতীয় রাজস্ব আদায়, সকল মোবাইল গ্রাহককে বাংলায় সকল তথ্য প্রদান, হাওর-দ্বীপ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডিজিটাল সংযুক্তি গড়ে তোলাসহ টেলিযোগাযোগ খাতে ডিজিটাল যুগের উপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।

মন্ত্রী বলেন, আমরা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের পর  স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দিকে এগুচ্ছি। এজন্য আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে ডিজিটালে রূপান্তর করতে হবে। বাংলাদেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার চক, ডাস্টার, কাগজ, কলম, চেয়ার, টেবিল এর পরিবর্তে পর্যায়ক্রমে ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু করতে হবে। এটি গর্ব করার মতো যে বিটিআরসি তার এসওএফ তহবিলের একটি প্রকল্পেরে আওতায় ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২৮টি পাড়াকেন্দ্রে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

আজ বিকালে রাজধানীর রমনায় আইইবি ভবনের বিটিআরসি’র সভাকক্ষে সম্প্রতি ড. দীনেশ চন্দ্র সেন স্মৃতি স্বর্ণপদক ও ‘বিজয় বন্ধু’ সম্মাননা প্রাপ্তিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মাননীয় মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বারকে সম্বর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এসব কথা বলেন।

উল্লেখ্য, ড. দীনেশচন্দ্র সেন সংকলিত মৈমনসিংহ গীতিকার তিনটি সংস্করণ প্রকাশের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা প্রকাশের  উদ্যোগ, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় অবিরাম অবদান রাখা, বিজয় বাংলা সফটওয়ার এবং  বিজয় ডিজিটাল শিক্ষা সফটওয়্যার উদ্ভাবনসহ  ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার উদ্ভাবনে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বারকে আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন স্মৃতি স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। আচার্য  দীনেশচন্দ্র সেন রিসার্চ সোস্যাইটি ভারত এই স্বর্ণপদক প্রদান করে। সোস্যাইটি’র  সাধারণ সম্পাদক এবং দীনেশচন্দ্র সেনের প্রপৌত্রী দেব কন্যা সেন এই  পদক মন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। অন্যদিকে ডরপ নামক বাংলাদেশী একটি প্রতিষ্ঠান মন্ত্রী মহোদয়কে বিজয় বন্ধু উপাধিতে ভূষিত করে।

মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে যা করেছেন তা জাতির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে পশ্চাদপদ ছিল। প্রিন্টিং কাজের জন্য একসময় শীসার হরফ আনা হতো পশ্চিমবঙ্গ থেকে। অথচ এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের কারণেই আমাদের বাংলাদেশের ডিজিটাল হরফ ব্যবহার করছে পশ্চিমবঙ্গ। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে ১৯৭২ সালে যন্ত্রে বাংলা লেখার সুযোগ হয়েছিল। মন্ত্রী বলেন, আমাদের যার যা দায়িত্ব আছে তা যথাযথভাবে পালন করতে পারলেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারবো।

বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (টেলিকম) মো. মাহবুব-উল-আলম, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, কমিশনার প্রকৌশলী শেখ রিয়াজ আহমেদ, মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেনও বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কমিশন সচিব মো. নুরুল হাফিজ।

সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, মাননীয় মন্ত্রীকে আমি অনেক আগে থেকেই চিনি ও জানি। একসময় ভাই সম্বোধন করতাম। তিনি বলেন, আমিই প্রথম মাননীয় মন্ত্রীকে মন্ত্রিত্ব পদ পেতে যাচ্ছেন তার সংবাদটি দিয়েছিলাম। তিনি বলেন, আমাদের অভিভাবকরা সচেতন নয়। মানুষকে অনুপ্রেরণা দিতে হবে। আমাদের মাননীয় মন্ত্রী একজন অনুপ্রেরণা দান করা সুন্দর মানুষ। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য হাইটেক পার্ক গড়ে তোলার নীতিমালা তৈরি সহ আইসিটির অনেক কাজেই তিনি মন্ত্রী হবার আগে থেকেই যুক্ত ছিলেন। মাননীয় মন্ত্রী অনেক উদ্যোক্তা তৈরি করেছেন। তার উৎসাহ ও অনুপ্রেরণার কারণেই বাংলাদেশের মানুষ প্রযুক্তিতে ঢুকতে পারছে।

বিটিআরসি’র মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, মাননীয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তী পুরুষ। তিনি বলেন, মাননীয় মন্ত্রী তথ্য ও যোগাযোগ  প্রযুক্তিতেই সীমাবদ্ধ নন, তিনি দেশবাসীর কাছে ডিজিটাল সেবা পৌছেঁ দেয়ার একজন কারিগর। বিটিআরসি’র ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন মন্ত্রীর সম্বর্ধনাকে যথার্থ মন্ত্রব্য করে বলেন, ক্ষণজন্মা মেধাবী এ মানুষটি তাঁর শ্রম ও মেধা দিয়ে দেশের প্রতি, মানুষের প্রতি তার ভালোবাসাকে বিলিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, আধুনিক বিশ্বের চেহারা ৯০ দশকেই তিনি বাংলাদেশের মানুষকে দেখিয়েছিলেন। তিনি ৯০ দশকেই বুঝেছিলেন, আগামির বাংলাদেশটিকে কেমন হতে হবে। ৯০ দশকেই তিনি বিজয় কী বোর্ড আবিষ্কার করে কম্পিউটারে বাংলাভাষার ব্যবহার শুরু করেছিলেন। এখন তিনি ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করছেন।

বক্তব্য শেষে বিটিআরসি’র পক্ষ থেকে মাননীয় মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বারকে বিশেষ স্মারক প্রদান করা হয়।

শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ

তাপপ্রবাহে অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা চালু এবং শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। বৃহস্পতিবার (২...

Read more

সর্বশেষ

ADVERTISEMENT

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত


সম্পাদক ও প্রকাশক : মাে:শফিকুল ইসলাম
সহ-সম্পাদক : এডভােকেট-মোঃ আবু জাফর সিকদার
প্রধান প্রতিবেদক: মোঃ জাকির সিকদার

কার্যালয় : হোল্ডিং নং ২৮৪, ভাদাইল, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা-১৩৪৯

যোগাযোগ: +৮৮০ ১৯১ ১৬৩ ০৮১০
ই-মেইল : dailyamaderkhobor2018@gmail.com

দৈনিক আমাদের খবর বাংলাদেশের একটি বাংলা ভাষার অনলাইন সংবাদ মাধ্যম। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ থেকে দৈনিক আমাদের খবর, অনলাইন নিউজ পোর্টালটি সব ধরনের খবর প্রকাশ করে আসছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রচারিত অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলির মধ্যে এটি একটি।

ADVERTISEMENT
x