প্রায় এক মাস চিকিৎসা শেষে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে ছাড়া পেলেন অসংখ্য মানুষের প্রিয় মুখ স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান আবু হেনা রনি।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে হাসপাতাল থেকে বাসায় যাওয়ার সময় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হল রুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রনি। তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর সরকারের তরফ থেকে আমাকে বিদেশে পাঠাতে চেয়েছিল, আমি রাজি হইনি। দেশের চিকিৎসায়, লাখো মানুষের দোয়া ও ভালোবাসায় এখন আমি সুস্থ আছি।’
আবু হেনা রনি বলেন, ‘গাজীপুরে অগ্নিদুর্ঘটনার পর তৎকালীন আইজিপি আমাকে এবং জিল্লুর রহমান ভাইকে বিদেশে পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, আমি বিদেশে যেতে রাজি হইনি। দেশের চিকিৎসাসেবার প্রতি আমার ভরসা ছিল। সেজন্যই আমি শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিতে সম্মত হয়েছি। আমি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, আইজিপি এবং এই হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তারা আমাকে দিনরাত যেভাবে চিকিৎসা এবং সেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলেছেন, সেই বিষয়টি আমি জীবনেও ভুলতে পারব না। পোড়া রোগীদের যে কী পরিমাণ যন্ত্রণা, সেটা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ বুঝবে না। আমি নিজে খুব ভালোভাবে সে যন্ত্রণা উপলব্ধি করতে পেরেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে যেন প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া যায়, সে বিষয়ে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রত্যেক জেলার হাসপাতালে যেন একটি করে বার্ন ইউনিট হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাই।’
এ সময় বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা জানেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। সেই দুর্ঘটনায় দগ্ধদের শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়েছিল। আবু হেনা রনি একজন জাতীয় মানের কৌতুক অভিনেতা।
ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে প্রথমে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিক্যাল কলেজে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে আজ তিনি এবং সেই দুর্ঘটনায় দগ্ধ আরেকজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। তবে, তাদের সম্পূর্ণ সুস্থ হতে আরও কিছু দিন সময় লাগবে।’
শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন বলেন, ‘দগ্ধদের চিকিৎসায় ১৩ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। চিকিৎসা শেষে তারা দুজন অনেকটাই সুস্থ হয়েছেন। তাই, আজ আমরা তাদেরকে রিলিজ দিচ্ছি।’
এ সময় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নজরুল ইসলাম মোল্যা, হাফিজ আক্তার, সৈয়দ নুরুল ইসলাম, মোস্তাক আহমেদ, রমনা জোনের উপ-কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এস এম আইউব হোসেনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং চিকিৎসক ও নার্সরা উপস্থিত ছিলেন।