স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে স্থানীয়দের চাহিদা পূরণের লক্ষে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের হাতনি বাজার গঠিত হয় ।
স্থানীয়রা নিজেদের আবাদ করা বিভিন্ন ধরণের সবজি, তরিতরকারি, গাছের বিভিন্ন ধরণের ফলমূল, কামার-কুমোর, তাঁতী, ধান-চালসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিস ক্রয়-বিক্রয়ে এসে লোকে লোকেরাণ্য হয়ে যেত । মানুষের ঠেলাঠালি পাড়িয়ে বাহিরে বের হওয়া লাগত । জন মানুষের শব্দ বহু দূর হতে শোনা যেত । প্রতি সপ্তাহের রবি ও বৃহস্পতিবার এই দুদিন ছিল হাটের বার ।
হাতনি এলাকা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী কাঞ্চননগর, পানিশাইল, ভাউতিপাড়া, ডিগ্রীচর, ডাউটিয়া, জামির্ত্তা, বকচর, বৈঠাখালি, মানিকনগর, মধুরচর, সুদক্ষিরা, বাস্তা, গাজিন্দাসহ আশপাশের বিভিন্ন চাষীরা নিজেদের উৎপাদিত শাক-সবজি পাইকারি-খুচরা বিক্রির উদ্দেশ্যে এ বাজারে আসত । হাতনি বাজারের পাইমারি স্কুলের মাঠটি প্রতি হাটবারের দিনে কানায় কানায় ভরে যেত । পা ফেলানোর ছিলনা জায়গা ।
তবে অধুনা কালের বিবর্তনে এ হাটটি হারিয়েছি তার ভরা যৌবন । প্রায় দশ বছর যাবৎ এখন বসেনা কোন হাট । আসেনা কোন ক্রেতা-বিক্রেতাগণ । সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাটবারের আজকে বৃহস্পতিবার নেই কোন লোকজন । সবে মাত্র রয়েছে একটি ছোট্ট চা- পানের দোকান । এ দোকানটিও থাকতনা যদি কিনা হাটের জায়গা ঘেষে ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও প্রাইমারি স্কুল না থাকত ।
স্থানীয়দের উদাসীনতা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়াতে এ হাটটি তার হারিয়েছে জৌলস । স্থানীয় বয়স্ক মুরুব্বি আমজাদ হোসেন (৭০) বলেন, এ হাটের বাজার খেয়ে কেটেছে নিজের কৈশর জীবন । মানুষের ভিরে চলাচল করা যেতনা যে হাটে ।
এখন এমন অবস্থায় তাকে সব সময় পিড়া দেয় । স্থানীয় আব্দুল কাদির, আজহার ও স্বপন মিয়াসহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এলাকায় এখন আর কেউ নেই যে পুনরায় এ হাটটি রক্ষা করবে । এ হাটটি সরকারিভাবে ডাক হত । এলাকার কোন হিতৈষী ব্যক্তি কিংবা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান এ হাটনির পূর্ব ঐতিহ্য রক্ষায় ।