বিলুপ্ত প্রায় ছনের ছাউনির ঘর

আরিফুল ইসলাম:

বিলুপ্তির পথে ছনের ঘর। গ্রাম ও শহরে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা বলে ছনের তৈরি ঘর। আগে গ্রাম-গঞ্জে প্রায় শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষের ছনের ছাউনির ঘর ছিল। পাশাপাশি উচ্চ মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের থাকার জন্য ছিল টিনের ঘর এবং ছনের ঘরগুলো ছিল অনেকটা শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত।

 

অতি গরমে যেমন, ঠান্ডা ও আরামদায়ক তেমনি শীতের দিনে ছিল উষ্ণ গরম। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়লই গ্রামের শাহিন আলম (৫০) জানান, এই ঘরটি আমার বাবার আমলের স্মৃতি রক্ষার্থে এখন পর্যন্ত ঘরের খাম বদল, সামান্য মেরামত করে পাটের খড়ির বেড়ার পরিবর্তে বাশেঁর চাটাইয়ের বেড়া দিয়ে ঘরটি ব্যবহার করার উপযোগী করে তুলেছি। তাছাড়া এই ঘর ছাউনি দেওয়ার মতো কারিগর নেই বললেই চলে।

 

কালের সাক্ষী বাপ দাদার আমলের এই ঘরটিও আমার বসতভিটায় আজ বিলীন হতে চলেছে। বিশেষ কায়দায় ছনকে সাজিয়ে কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে ছাউনি দেওয়া হতো।ধনি,দরিদ্র সরাই ছনের ঘরে বাস করত। তবে ধনিদের বাড়ীতে এক-দুটি টিনের ঘর দেখা যেত।

 

সাধারণত বন্যা, ভূমিকম্প, ঝড় কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এসব ছনের তিন-চার বছর পর মেরামত বা নতুন খর ব‍্যবহার করা হত। দরিদ্র মানুষেরা ছনের বদলে খড় ব‍্যবহার করতো। আভিজাত্য অনুযায়ী ছনের ঘরে বিভিন্ন নকশা উন্নত মানের ছন ও ভালো ঘর কামলা ব‍্যবহার করা হত। জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়েছে। ফলে ইট, পাথর, সিমেন্ট রড, টিন আজ দখল করে নিয়েছে অতীতের ছনের ঘরের স্থান।

 

এ ব্যাপারে গ্রামের বয়োবৃদ্ধ কাইয়ুম (৮০) তার স্মৃতিচারণ করে বলেন, ছনের ঘর না থাকায় মানুষ অসুস্থ হচ্ছে বেশি। কারণ মানুষ প্রাকৃতিক বাতাস ও আবহাওয়া থেকে আজ অনেক দূরে। সারাক্ষণ এসি ও বৈদ্যুতিক পাখা ব্যবহার করে আসছে। আগামী প্রজন্মের কাছে রূপকথা হয়ে থাকবে ছনের ঘর বা কুঁড়েঘর।

 

বড়ভিটা ইউনিয়নের ঘোগারকুটি গ্রামের শামীম কবির বুলবুল বলেন, গরীবের শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত ঘর হচ্ছে ছনের ঘর। গ্রামের হতদরিদ্র কিংবা মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর একমাত্র আশ্রয় ছিল ছনের ঘর। বাঁশের খুঁটি এবং চাটাই কিংবা বাঁশের শলাকা দিয়ে তৈরি দোচালা বা চারচালা ঘরের ছাউনি হিসেবে ব্যবহার করা হতো ছন।

 

কিছুদিন আগেও গ্রামবাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যেত ছনের ঘর। বর্তমানে ছনের ঘর নাই বললেই চলে। বাংলার ঐতিহ্যর সঙ্গে এই ছনের ঘর ছিল খুব আরামের জায়গা। গরিবের পাশাপাশি সরকারি কার্যালয়সহ,ধনাঢ্য পরিবারের বাড়িতেও ছিল ছনের ঘর।

 

বসত ঘরের পাশাপাশি তৈরি করা হতো রান্না ঘর। আর ধান ভানার জন্য এসব ঘরে ব্যবহার করা হতো ঢেঁকি। আজ গ্যাসের চুলা বৈদ্যুতিক কুকার, রাইস মিল, আসায় একদিকে যেমন মানুষের জীবনকে আধুনিক করে তুলেছে, পাশাপাশি মানুষের সচ্ছলতায় হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলার ছনের ঘর। নতুন প্রজম্ম জানে না কুঁড়েঘর কী। আর প্রবিনদের কাছে কূঁড়েঘর কেবলই ম্মৃতি।

শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ

তাপপ্রবাহে অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা চালু এবং শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। বৃহস্পতিবার (২...

Read more

সর্বশেষ

ADVERTISEMENT

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত


সম্পাদক ও প্রকাশক : মাে:শফিকুল ইসলাম
সহ-সম্পাদক : এডভােকেট-মোঃ আবু জাফর সিকদার
প্রধান প্রতিবেদক: মোঃ জাকির সিকদার

কার্যালয় : হোল্ডিং নং ২৮৪, ভাদাইল, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা-১৩৪৯

যোগাযোগ: +৮৮০ ১৯১ ১৬৩ ০৮১০
ই-মেইল : dailyamaderkhobor2018@gmail.com

দৈনিক আমাদের খবর বাংলাদেশের একটি বাংলা ভাষার অনলাইন সংবাদ মাধ্যম। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ থেকে দৈনিক আমাদের খবর, অনলাইন নিউজ পোর্টালটি সব ধরনের খবর প্রকাশ করে আসছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রচারিত অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলির মধ্যে এটি একটি।

ADVERTISEMENT
x