বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল চালু হওয়ায় শেখ হাসিনার সরকারের প্রশংসা করেছে মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ। গণমাধ্যমটির এক বিশেষ প্রতিবেদনে ঢাকায় মেট্রোরেলের প্রয়োজনীয়তাসহ বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, মেট্রোরেল শেখ হাসিনা সরকারের ভাবমূর্তি বাড়াবে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহর ঢাকায় উদ্বোধন হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল। যাতায়াত সহজ করতে জাপানের সহযোগিতায় নির্মিত এ প্রকল্পটি বুধবার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে বলা হয়, উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।
বুধবার উদ্বোধন হয় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকার মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে এ প্রকল্পটি। রিজার্ভ হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি ও জ্বালানি সংকটে থাকা বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতেও সহায়তা করবে এটি। ঢাকার ৩০৫ বর্গকিলোমিটার এলাকায় এক কোটির বেশি মানুষের বাস। শহরটিতে গাড়ির গতি প্রতি ঘণ্টায় গড়ে সাত কিলোমিটার। দশ বছর আগেও ঢাকায় গাড়ির গতি প্রতি ঘণ্টায় ছিল গড়ে ২১ কিলোমিটার।
ব্লুমবার্গ বলছে, ঢাকায় যানজটের কারণে প্রতিদিন ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। পাশাপাশি এতে প্রতি বছর কয়েক বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়। দ্য ইকোনমিস্টের ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ২০২২-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের বসবাসযোগ্য ১৮২টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান তলানিতে। বিশ্বব্যাংক বলছে, ভবিষ্যতে ঢাকার গাড়ির গতি প্রতি ঘণ্টায় গড়ে চার কিলোমিটারে নেমে আসতে পারে, যা সাধারণ মানুষের হাঁটার গতির চেয়ে কম।
ঢাকার মেট্রোরেল নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্টিন রমা বলেছেন, ‘ঢাকার মতো শহরের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক উন্নয়ন। আপনি যদি ভারতের বিভিন্ন শহরের দিকে তাকান দেখবেন মানুষের কাজে যাওয়ার যোগাযোগ পথে অনেক পরিবর্তন এসেছে। মেট্রোরেল যোগাযোগের নিরাপদ একটি বাহন। বিশেষ করে নারীদের জন্য। দক্ষিণ এশিয়ায় যা গতানুগতিক নয়।’ তবে রমা বলেন, ‘মেট্রোরেলের কারণে ঢাকার যানজট এ মুহূর্তেই চলে যাবে এমন চিন্তা করাটা বোকামি হবে। কারণ কোনও যোগাযোগ স্থাপনা তৈরির পর রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের যে চাপ কমে সেটি নতুন বাহনে আবারও ফিরে আসে।’