তাহসানুর রহঃ শাহজাহান
চুয়াডাঙ্গায় গত মৌসুমের চেয়ে এবার শসার ভাল ফলনের পাশাপাশি দামও বেশ ভাল। চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে বাজারে সবজির দামও ভাল থাকায় বেজায় খুশি চাষিরা। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০০ হেক্টর জমিতে শসার আবাদ হয়েছে বলে জানা যায়।
এ ছাড়াও অল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর,দামুরহুদা, জীবন নগর উপজেলার কয়েকটি স্থানে লাউ,শিম,বাঁধা কপি,উচ্ছে সহ বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে সবজি চাষ। এভাবে দিন দিন বাড়ছে সবজি চাষের সংখ্যা পরিণত হচ্ছে সবজি অঞ্চল।
কথা হয় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকর চন্দ্র ইউনিয়নের ভান্ডারদহ গ্রামের কৃষক মানার হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে নতুন ভান্ডারদহ মাঠে শসা চাষ করছেন তিনি। চাহিদা থাকায় শসা চাষে বেশ মুনাফা অর্জন করেছেন। চলতি মৌসুমে ২ বিঘা জমিতে শসা চাষ করেছেন।প্রায় তিন মাসে বিক্রির উপযোগী হয় তার শসা। এ সময়রে মধ্যে দেড় মাস পরিচর্যা করতে হয়। আর দুই মাস ধরে চলে শসা সংগ্রহ ও বিক্রি।
শসা চাষে খরচ কম উল্লেখভাবে চাষি আনোয়ার বলেন, জমি তৈরি করে বীজ লাগানোর এক সপ্তাহের মধ্যেই চারা গজিয়ে যায়। এরপর পরিচর্যা, পানি, সার ও শসার লতা বিস্তারের জন্য মাচা দিলেই দেড় মাস পর ফুল-ফল আসা শুরু করে। আনোয়ার আরো বলেন, গত ১ মাস ধরে প্রতিদিন ১৫০/২০০ কেজি করে শসা সংগ্রহ করে পাইকারি দরে বিক্রি করি। প্রতি কেজি শসা ১৫/২০ টাকা করে জমিতেই পাইকারী দরে ব্যবসায়ীকের কাছে বিক্রি হয়।
সরোজগঞ মাঠের আরেক শসা চাষি শফি বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও তিনি চার বিঘা জমিতে শসা চাষ করেছেন। শসার বীজ রোপন, পরিচর্যা, মাচা তৈরি, লেবার খরচ সমস্ত কিছু দিয়ে ১ বিঘা শসার জমিতে ২৫ থেকে ৩২ হাজার টাকার ন্যায় খরচ হয়। ভালো মতো ফলন হলে এক বিঘা জমির শসা ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। শসা শেষ হয়ে গেলে শসার জমিতে শীতকালীন ফসল হিসেবে গম, মুশুরি, মাসকলাই এসব চাষ করবেন। তিনি বলেন এই মাঠে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে শসা চাষ হচ্ছে এ বছর।
বর্তমানে জেলার চাহিদা মিটিয়ে দখল করেছে রাজধানীর কাওরান বাজার, গাজীপুরসহ সারা দেশের সবজি বাজার। প্রতিদিন সকাল, সন্ধ্যায় ট্রাকে ট্রাকে এ অঞ্চলের শসাসহ বিভিন্ন সবজি চলে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বলেন, কৃষি বিভাগের নির্দেশনা আর চাষিদের পরিশ্রম ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শসার ভাল ফলন হয়েছে চলতি মৌসুমে ।
সারা দেশে শসার চাহিদা থাকায় চাষিরা বেশ লাভবান হচ্ছে। সবজি সম্প্রসারণে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা সহ নিরাপদ ও বিষ মুক্ত সবজি চাষে ফেরোমন ফাঁদ সহ বিভিন্ন প্রযুক্তি বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষন দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া বিভিন্ন ভাবে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় জোর দার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেন।