নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী জাকির খানকে বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। শুক্রবার রাতে রাজধানীর ভাটারার বসুন্ধরা এলাকা থেকে জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সাব্বির হত্যা মামলার অন্যতম আসামি।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা বলেন, জাকিরের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে পলাতক ছিলেন। সম্প্রতি দেশে ফিরে আত্মগোপন করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এ ব্যাপারে বিস্তারিত ব্রিফিং করে জানানো হবে।
র্যাব জানায়, নারায়ণগঞ্জের এক সময়কার শীর্ষ সন্ত্রাসী, একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী আন্ডার ওয়ার্ল্ড গডফাদার এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচিত নাম জাকির খান। তার নামে চারটি হত্যাসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে। বিভিন্ন সময় তিনি এসব মামলায় জেল খাটেন। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি আরও দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠেন। এ সময় তিনি নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ এলাকায় বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী ও মাদকের সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন।
এক পর্যায়ে দেওভোগ এলাকার অন্য শীর্ষ সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে শহরের সোনারবাংলা মার্কেটের পেছনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে শহরের ত্রাস হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ ২০০৩ সালে সাব্বির আলম হত্যাকাণ্ডের পর তিনি দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ড পাড়ি জমান। এ সময় বিভিন্ন মামলায় আদালতে জাকির খান দোষী সাব্যস্ত হলে আদালত তাকে সাজা দেন। এরপর থেকেই গ্রেপ্তার এড়াতে জাকির খান দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন।
র্যাবের প্রাথমিক অনুসন্ধান ও আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, জাকিরের বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে সন্ত্রাসমূলক অপরাধ দমন বিশেষ আইনে মামলা করা হয়। ওই মামলায় আসামি জাকির খানের ১৭ বছরের সাজা হয়। পরে উচ্চ আদালতে তার সাজা কমে আট বছর হলেও তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে দেশে ও বিদেশে প্রায় ২১ বছর পলাতক ছিলেন।
মূলত ২০০৩ সালে সাব্বির আলম হত্যা মামলায় আসামি হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। পরে তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারি হয়। তিনি দীর্ঘদিন থাইল্যান্ডে আত্মগোপনে ছিলেন এবং সম্প্রতি ভারত হয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর থেকে তিনি পরিচয় গোপন করে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সপরিবারে বসবাস করছিলেন।