সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে নন কমিউনিকেবল ডিজিজ যেমন: স্ট্রোক, মেরুরজ্জুতে আঘাত, ডিমেনশিয়া, ডিপ্রেশন, সিজোফ্রেনিয়া, ইত্যাদি ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে বাড়ছে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার যেমন : অটিজম, সেরিব্রাল পালসি, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা ইত্যাদি। ফলশ্রুতিতে মানুষ শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অনেকে দৈনন্দিন কর্মক্ষমতাও হারিয়ে ফেলছে। এর বিরুপ প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে।
এমতাবস্থায় অকুপেশনাল থেরাপির মতো চিকিৎসা সেবা অপরিহার্য; যার মাধ্যমে রোগীরা কর্মময় জীবনে ফিরে যেতে পারে।
১৩ তম বিশ্ব অকুপেশনাল থেরাপি দিবস উপলক্ষ্যে সাভারে বাংলাদেশে সিআরপি অকুপেশনাল থেরাপি বিভাগ ও বাংলাদেশ অকুপেশনাল থেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের (বিওটিএ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যম, সবাই হবো সক্ষম’ এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে বিশ্বের ১০০টি দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হলো দিবসটি। এ উপলক্ষে সকালে সিআরপিতে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। এরপর আলোচনা সভা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বাংলাদেশে প্রায় দুই কোটির বেশী লোক বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধকতার শিকার। এই বিশাল জনগোষ্ঠির চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রিপ্রাপ্ত অকুপেশনাল থেরাপিস্টের সংখা মাত্র ৩৬৫ জন; যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। তাই বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকের পাশাপাশি প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের জন্য নিয়োজিত প্রায় শতাধিক সংস্থায় অকুপেশনাল থেরাপিস্টগণের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি সহ বিভিন্ন থেরাপি আমাদের দেশে ব্যাপকভাবে চালু সহ আরো দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা উচিত। পেশাগত মান বাড়াতে সিআরপি দীর্ঘদিন ধরে এসব কাজ করে আসছে এবং বিপুল জনগোষ্টিকে অত্যন্ত জরুরী সেবাটি দিয়ে আসছে। আমি আশা করি, ভবিষ্যতেও এসব কার্যক্রম অব্যহত থাকবে। সকল অকুপেশনাল থেরাপিস্টগণের প্রতি আমার ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা। ’
জানা গেছে, দিবসটি উপলক্ষ্যে সারা দেশের বিভিন্ন অকুপেশনাল থেরাপি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহরের অটিজম ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানেও র্যািলি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। দিবসটির প্রতিপাদ্য ও গুরুত্ব তুলে ধরতে দেশের সকল জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন বরাবর প্রকাশনা প্রেরণ করা হয়। বগুড়া শহরে ব্যক্তি পর্যায়ে অটিজম ও মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত শিশুদের সেবায় বিনামূল্যে অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা ক্যাম্পও পরিচালিত হয়।