আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় রাজশাহীতে বাংলা ভাই সৃষ্টি করেছিল। তারা জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছিল। আবার যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে একটি নয়, এবার ১০টি বাংলা ভাই সৃষ্টি হবে।’
আজ রোববার বিকেলে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এই জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির সময় রাজশাহীতে বাংলা ভাই সৃষ্টি হয়েছিল। বাংলা ভাই শহরে মিছিল করেছিল অস্ত্র নিয়ে। সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়েছিল রাজশাহী। সে সময় বাংলা ভাইকে বরণ করেছিল রাজশাহীর বিএনপির নেতারা। রাজশাহীতে আজ সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রাজশাহী শহর বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন শহরে পরিণত হয়েছে আমাদের নেত্রীর হাত ধরে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি নানা কথা বলছে। বিএনপির নেতা তারেক রহমান কোথায়? মুচলেকা দিয়ে গেছেন যে রাজনীতি করবেন না। আগামী নির্বাচনের পর বিএনপিকে আর সুযোগ দেব না। বিএনপি ক্ষমতায় এলে একটি নয়, ১০টি বাংলা ভাই সৃষ্টি করবে। তারা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন হাওয়া ভবন করেছিল। আমোদ ফুর্তির জন্য খোয়াব ভবন বানিয়েছিল। আবার যদি তারা সুযোগ পায়, এই রাজশাহীকে তারা আবার জঙ্গিবাদের শহরে পরিণত করবে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘মানুষকে যদি প্রশ্ন করা যায়, হাওয়া ভবনের সবচেয়ে বড় চোরের নাম কী? মানুষ বলে তারেক রহমান। আর মির্জা ফখরুল বলে, তারেক জিয়া প্রধানমন্ত্রী হবে। রাজশাহীবাসী সাবধান। সেই সুযোগ দেওয়া যাবে না।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজ মাদ্রাসা ময়দানে জনতার যে ঢেউ, গোটা রাজশাহীতে আজ জনতার ঢেউ। শহর থেকে সেই ঢেউ পদ্মা নদীর ঢেউয়ের সঙ্গে মিলে গেছে। আকাশের রংধনু যেন মাদ্রাসা মাঠে এসে মিশে গেছে। রাজশাহী জনতার সমুদ্রে পরিণত হয়েছে। আরও কয়েক গুণ মানুষ আসছে রাস্তায়। কিছুদিন আগে এখানে বিএনপি সমাবেশ করেছিল। এই কারণেই এই মাঠে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আজকে মাদ্রাসা ময়দান জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।’
বিএনপির ওই গণসমাবেশকে ‘পিকনিক’ মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি কাঁথা-কম্বল নিয়ে এসেছিল। ছাগল জবাই করেছিল। ওটা কোনো জনসভা ছিল না। জনসভার নামে সব জায়গায় পিকনিক করেছে। সব জায়গায় কাঁথা-কম্বল-বালিশ নিয়ে গিয়ে পিকনিক করেছে। আজকে পুরো বাংলাদেশে জনতার সমুদ্রে ঢেউ উঠে গেছে। এই ঢেউ নৌকার পক্ষে মানুষের ঢেউ।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কয়দিন আগে আকাশ থেকে রাজশাহী দেখে মনে হচ্ছিল, এটি রাজশাহী শহর নয়। এটি ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম। রাজশাহী শহর ১৪ বছরে বদলে গেছে। আগে মাত্র একটি বড় ভবন ছিল, আজকে গুনে শেষ করা যাবে না। আজ রাজশাহী বদলে গেছে, বিভাগ বদলে গেছে, দেশ বদলে গেছে। এই উন্নয়ন করেছে আওয়ামী লীগ। তাই সব সময় নৌকার পক্ষেই থাকতে হবে।’
জনসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল।
